নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসক ও মহাসচিবের পদত্যাগসহ সহায়ক কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানানো হয়। আগামী ১০ দিনের মধ্যে দাবি না মানা হলে মানববন্ধনসহ বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আনোয়ার হোসেন, সদস্যসচিব মো. জালালউদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, খোরশেদ আলী মোল্লা, আবু মোতালেব, খন্দকার রহুল আমিন, শফিকুল ইসলাম ভরসা, ইসহাকুল হোসেন সুইট, মশিউর রহমান, হাফেজ হারুন, রানা চৌধুরী, কাওসার আহমেদ, কামাল হোসেন পলাশ, মাহফুজুর রহমান, আলমগীর হোসেন, মো: ইকবাল, জুলহাস আহমেদ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী ১১ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের পর্ষদ বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তার ওপর দায়িত্ব ছিল ১২০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে নতুন পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা।
তবে অভিযোগ ওঠে, হাফিজুর রহমান নিজের পছন্দের লোকদের নিয়ে চার সদস্যের একটি সহায়ক কমিটি গঠন করেছেন। একই অ্যাসোসিয়েশন থেকে একাধিক ব্যক্তি ওই কমিটিতে আছেন, যা বিধিসম্মত নয়। এই কমিটি ব্যবসায়ীদের স্বার্থে না কাজ করে নিজস্ব স্বার্থে কাজ করছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে বলে অভিযোগ করা হয়।
তারা আরও জানান, এফবিসিসিআইয়ের নতুন বাজেটের প্রস্তুতির জন্য সাবেক সভাপতি, সহ-সভাপতি ও অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় না করে প্রশাসক বাজেট প্রস্তুত করছেন, যা ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫-এ এফবিসিসিআইয়ের সদস্য নন এমন ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও, প্রকৃত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের বাদ দেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগও তোলা হয়।
এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলেনে চার দফা দাবি পেশ করা হয়। সেগুলো হলো-
১. এফবিসিসিআই নির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিকে প্রশাসক হিসেবে চাই।
২. নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন ততটুকু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে এফবিসিসিআইকে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিতে হবে।
৩. অবিলম্বে সহায়ক কমিটি বাতিল করে প্রকৃত নিরপেক্ষ, সৎ ব্যবসায়ী প্রতিনিধির সমন্বয়ে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। যাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। এই কমিটির কোনো সদস্য এফবিসিসিআই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবের না।
৪. চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের সব পদে স্ব স্ব গ্রুপের সরাসরি ভোট দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হতে হবে।
আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে পরিষদের নেতারা বলেন, সরকারের নিযুক্ত প্রশাসক দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। সংস্কারের নামে বিলম্বে নির্বাচন ঠেকানো হচ্ছে, যা মেনে নেওয়া হবে না।
তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত বিষয়টি আমলে নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছাবে, অন্যথায় আন্দোলন কর্মসূচি অনিবার্য হয়ে উঠবে।